আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মিয়ানমারের প্রতি আর উদারতা দেখানোর সুযোগ নেই। কোনো অবস্থাতেই বাস্তুচ্যুতদের ঢুকতে দেয়া হবে না। তিনি বলেন, মিয়ানমার ইস্যুতে আর কোনো উদারতা দেখানো সম্ভব নয় এবং সেখান থেকে নতুন কেউ বাংলাদেশে এলে তাকে গ্রহণ করা হবে না। গতকাল ধানমণ্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, মিয়ানমার ইস্যুতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যা বলেছেন, সেটিই আমাদের সরকার ও দলের বক্তব্য। ঘটনাস্থলের আশপাশে কয়েকটি গ্রাম নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিশ্চয়ই এ ব্যাপারে কথা বলবে। যতই উস্কানি আসুক, আমরা প্রতিক্রিয়া দেবো না। ওবায়দুল কাদের বলেন, ওই দেশের অভ্যন্তর থেকে ছোড়া মর্টারের শেল পড়ছে আমাদের সীমান্তে। এরইমধ্যে তিন জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
আবার আকাশসীমাও লঙ্ঘন করছে, তাদের নিজেদের সমস্যার কারণে আমরা সমস্যার সম্মুখীন হবো কেন? এতে জাতিসংঘ এবং চীনের উদ্যোগ নেয়া উচিত। তিনি বলেন, এখানে কনফ্লিক্ট অফ ইন্টারেস্ট তাদের নিজস্ব, তবে তা পাশের দেশের জন্য যাতে আতঙ্কের না হয় এটা তাদেরকেই দেখতে হবে। এ ব্যাপারে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। চীনের রাষ্ট্রদূতকে বলেছি, যেহেতু মিয়ানমার চীনের কথা শোনে, তাই তাদেরও ভূমিকা রাখতে হবে। বাংলাদেশ সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছে চীনকে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, অর্থনীতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার করে চিঠি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বিএনপি এখন কী বলবে? ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি’র নেতারা পালিয়ে গেছে, কেউ গাঢাকা দিয়েছে। এখন আপনাদের ক্ষমতায় আসার শক্তির উৎসটা কী? জনগণ ইতিমধ্যে আপনাদের কাছ থেকে সরে গেছে। জনগণও নেই, বিদেশি বন্ধুরাও বিএনপিকে ছেড়ে চলে গেছে। যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি বেশি ভরসা ছিল সেই যুক্তরাষ্ট্রও শেখ হাসিনার সরকারের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করেছে। এখন ক্ষমতায় যেতে বিএনপি কোন আশায় বসে থাকবে? জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতিবাচক কর্মকাণ্ড নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দলের শক্ত অবস্থান তুলে ধরে তিনি বলেন, একটা দলের সবাই ভালো মানুষ এমন দাবি করতে পারি না। খারাপ কাজও করে কিছু মানুষ। আমরা খারাপ কাজটা প্রশ্রয় দেই না। আইনের আওতায় আনার মতো অপরাধ হলে অবশ্যই আনা উচিত। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে অতীতেও কেউ অপরাধ করে পার পায়নি। তিনি বলেন, নির্বাচনে ২৮টি রাজনৈতিক দল অংশ নিয়েছে। সংসদ বসেছে। অধিবেশনের শুরুতে স্ট্যান্ডিং কমিটি পর্যন্ত হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুরো সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটি নিজ হাতে লিখেছেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আবারো রাজনীতি করতে পারবেন কিনা- এমন প্রশ্নের উত্তরে ওবায়দুল কাদের বলেন, খালেদা জিয়া রাজনীতি করবেন কিনা এটা বিএনপি’র নেতাদের প্রশ্ন করাই ভালো, এটা তাদের সিদ্ধান্তের ব্যাপার। সংসদে বিএনপিকে ব্যান করার দাবি উঠেছে, এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, দেখুন আমি একটা কথা বলি, সংসদে সবাই কথা বলতে পারেন। সদস্যদের নানা মতামত (অপিনিয়ন) থাকতে পারে। কিন্তু মতামতটাই সিদ্ধান্ত, এমনটা মনে করার এখনো কোনো কারণ নেই। আমরা এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত দলীয়ভাবে চিন্তা করিনি। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন প্রমুখ।
