অধিকৃত পূর্ব জেরুসালেমের কালান্দিয়া এলাকার কাছে ১০ হাজার বসতি নির্মাণ করতে যাচ্ছে ইসরাইল সরকার। বিভিন্ন ইসরাইলি গণমাধ্যম এমন তথ্য প্রকাশ করেছে। মঙ্গলবার এমন সংবাদ প্রকাশ করেছে ইয়েনি শাফাক।
ইসরাইলের চ্যানেল-১৩ তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, ইসরাইল নিয়ন্ত্রিত জেরুসালেম শহর কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনা অনুসারে নতুন ইহুদি বসতি নির্মাণ করা হবে। ইসরাইলের শিল্পাঞ্চল আটারোটের কাছে কালান্দিয়া এলাকায় পরিত্যক্ত জেরুসালেম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জমিতে এ ইহুদি বসতি নির্মাণ করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
কিভাবে এ ইহুদি বসতি নির্মাণ করা তার সম্পর্কে ইসরাইলি এ টিভি চ্যানেলটি তেমন কিছু জানায়নি।
১৯৬৭ সালের আগে এ জেরুসালেম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি কালান্দিয়া বিমানবন্দর নামে পরিচিত ছিল। এটা ছিল পশ্চিম তীরের একমাত্র বিমানবন্দর। কিন্তু, যখন ইসরাইল এ অঞ্চল দখল করে তখন তারা এ বিমানবন্দরটির আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনার কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। পরে ২০০০ সালে এ বিমানবন্দরটিকে বন্ধ করার আগ পর্যন্ত শুধু অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের কার্যক্রম চালু রাখে।
এ বিমানবন্দরটিকে ১৯২০ সালে নির্মাণ করা হয়েছে। ১৯২৪ সালে ব্রিটিশ ম্যান্ডেট কর্তৃপক্ষ এ বিমানবন্দরটি চালু করে। পরে ১৯৩৬ সালে এ বিমানবন্দর থেকে নিয়মিত ফ্লাইট কার্যক্রম চালু করা হয়। এ বিমানবন্দরটি ১২ শ’ দুনুমস বা ২৯৭ একর জমিতে তৈরি।
২০২০ সালের জানুয়ারিতে তুরস্কের আনাদোলু এজেন্সিকে জেরুসালেমের আরব স্টাডিজ সোসাইটির কার্টোগ্রাফি বিভাগের পরিচালক খলিল তাফাকজি বলেন, জেরুসালেম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি নতুন ইহুদি বসতি নির্মাণ করতে যাচ্ছে ইসরাইল। তখন বিমানবন্দরের অধিকাংশ জমি দখল করে নতুন ইহুদি বসতি নির্মাণ করা হবে।
ইসরাইলি মানবাধিকার সংগঠন পিস নাউ তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, জেরুসালেম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জমিকে তাদের রাষ্ট্রীয় সম্পদ বলে মনে করে ইসরাইল। এ কারণে ফিলিস্তিনি জমির মালিকদের কোনো ক্ষতিপূরণ দিবে না ইসরাইল। যদিও জেরুসালেম বিমানবন্দরের অনেক জমির মালিক ফিলিস্তিনিরা।
এ বিষয়ে খলিল তাফাকজি বলেন, জেরুসালেম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে ধ্বংস করে ইহুদি বসতি নির্মাণ করার মানে হচ্ছে এ বিমানবন্দরকে কেন্দ্র করে যেন ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের কোনো রাজধানী পূর্ব জেরুসালেমে গঠিত হতে না পারে।
আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুসালেম অধিকৃত ভূখণ্ড এবং এখানে সকল ধরনের ইহুদি বসতি নির্মাণ অধৈধ।