1. shahajahanbabu@gmail.com : admin :
একদিনে ৮০ লাখ টিকাদান যারা যেভাবে পাবেন - Pundro TV
রবিবার, ২৪ মার্চ ২০২৪, ০৬:৫০ পূর্বাহ্ন



একদিনে ৮০ লাখ টিকাদান যারা যেভাবে পাবেন

অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিতঃ মঙ্গলবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১

সারা দেশে আজ বিশেষ কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে ২৮শে সেপ্টেম্বর দেশব্যাপী গণপরিসরে টিকা ক্যাম্পেইন কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এদিন সকাল ৯টা থেকে এ কার্যক্রম শুরু হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত ৭৫ লাখ ডোজ টিকা দেয়া না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। সঙ্গে নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচিও চলবে। এ ক্ষেত্রে নির্ধারিত জনগোষ্ঠী যাদের ২৫ বছর বা তার বেশি তাদের সোমবার রাতেই এসএমএসের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়ার কথা রয়েছে। টিকা নিতে আসার সময় তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র এবং টিকা কার্ড সঙ্গে আনতে হবে। বর্তমানে প্রতিদিনের টিকাদান কর্মসূচিতে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ মিলে ৫ থেকে ৬ লাখ মানুষ টিকা গ্রহণ করছেন।

গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম টিকা ক্যাম্পেইনের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে বলেন, ২৮শে সেপ্টেম্বর আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন।

এই দিনটিকে কেন্দ্র করে সারা দেশব্যাপী টিকা ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ব্যাপক হারে টিকা প্রদানের কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। এই ক্যাম্পেইনের শুধুমাত্র প্রথম ডোজের টিকা দেয়া হবে। একইভাবে আগামী মাসের একই তারিখে দ্বিতীয় ডোজের টিকাদান শুরু হবে। সকাল ৯টা থেকে শুরু হওয়া এ কার্যক্রম লক্ষ্যমাত্রা ৭৫ লাখে পৌঁছানো পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। টিকা প্রদানের পর আমাদের ভ্যাকসিনেশন টিম কেন্দ্রে এক ঘণ্টা অবস্থান করবে। স্বাস্থ্য মহাপরিচালক বলেন, জেলা-উপজেলায় টিকা ব্যবস্থাপনায় দায়িত্বরতরা টিকা ক্যাম্পেইনের সময় পরিবর্তন করতে পারবেন। বৃষ্টি-বাদল বা অন্যান্য যেকোনো সুবিধা-অসুবিধার কথা বিবেচনায় রেখে তারা তাদের সুবিধা মতো সময়ে এ কর্মসূচি পালন করতে পারবেন। তবে কোনোভাবেই আমাদের নিয়মিত টিকা কার্যক্রম বন্ধ করা যাবে না। এই ক্যাম্পেইনে আমরা আগে থেকেই নির্ধারিত জনগোষ্ঠী যাদের বয়স ২৫ বছর বা তার বেশি তাদের এসএমএসের মাধ্যমে জানিয়ে দেবো। খুরশীদ আলম বলেন, এ ক্ষেত্রে আমরা যাদের বয়স ৪০ বছরের বেশি তাদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে। বয়স্ক, শারীরিক প্রতিবন্ধীদের আমরা বিশেষ বিবেচনায় আনবো। তবে স্তন্যদানকারী মা এবং গর্ভবতীদের টিকা ক্যাম্পেইনের আওতায় আনা যাবে না। টিকা নেয়ার সময় জাতীয় পরিচয়পত্র এবং টিকা কার্ড সঙ্গে আনতে হবে। তিনি আরও বলেন, সারা দেশে উপজেলা পর্যায়ের প্রতিটি ইউনিয়নের যেকোনো একটি ওয়ার্ডের একটি কেন্দ্রে ৩টি বুথ থাকবে। পৌরসভায় একটি ওয়ার্ডের একটি কেন্দ্রে একটি বুথ এবং সিটি করপোরেশনের প্রতিটি ওয়ার্ডে তিনটি বুথের মাধ্যমে টিকা দেয়া হবে। সারা দেশে আগে থেকে যেসব কেন্দ্রগুলোয় টিকা দেয়ার ব্যবস্থা ছিল, সেগুলোতে টিকাদান অব্যাহত থাকবে। টিকা নিতে অপেক্ষারত বয়স্কদের জন্য বসার ব্যবস্থা করতে হবে এবং টিকা দেয়ার পরে প্রত্যেকে নির্দিষ্ট স্থানে কমপক্ষে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করবেন। কেন্দ্রগুলোতে নারীদের জন্য পর্দাসংবলিত আলাদা টিকার জায়গার ব্যবস্থা করা হবে। স্বাস্থ্যের ডিজি বলেন, দেশে যখন করোনা মহামারি শুরু হলো, এবং যখন পৃথিবীতে সর্বপ্রথম টিকার অনুমোদন দেয়া হলো, তখন থেকেই প্রধানমন্ত্রী আমাদের টিকা সংগ্রহের জন্য অনুমতি দিয়ে রেখেছেন। একমাত্র তার কারণেই আমরা সবার আগেই পর্যাপ্ত টিকার ব্যবস্থা করতে পেরেছি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, উপজেলা পর্যায়ে প্রতিটি ইউনিয়নে ১৫০০ বা তদূর্ধ্ব, পৌরসভা পর্যায়ে প্রতিটি ওয়ার্ডে ৫০০ বা তদূর্ধ্ব এবং সিটি করপোরেশন পর্যায়ে প্রতিটি ওয়ার্ডে ১০০০ বা তদূর্ধ্ব মানুষকে ভ্যাকসিন প্রদানের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ইউনিয়ন পর্যায়ে ওয়ার্ডের প্রতিটি ভ্যাকসিনেশন সেন্টারের ৩টি বুথে ৩টি টিম থাকবে (নিজ ওয়ার্ডের স্বাস্থ্য সহকারী এবং পরিবার কল্যাণ সহকারীসহ অবশিষ্ট ২টি ওয়ার্ডের ৪ জন স্বাস্থ্য সহকারী এবং পরিবারকল্যাণ সহকারী)। প্রতিটি টিমে ২ জন ভ্যাকসিনেটর এবং ৩ জন স্বেচ্ছাসেবী কাজ করবে। ক্যাম্পেইনের জন্য কেন্দ্র নির্ধারণের ক্ষেত্রে প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, মেডিকেল অফিসার পৌরসভা, উপজেলা  স্বাস্থ্য ও  পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর, জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় রাজনৈতিক  নেতৃবৃন্দ এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে সমন্বয়ের মাধ্যমে ভ্যাকসিনেশনের কেন্দ্র স্থান নির্ধারণ করতে হবে।

এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২৬শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশে প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন ২ কোটি ৪৫ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪৬ জন। অন্যদিকে উল্লিখিত  সময় পর্যন্ত মোট দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ১ কোটি ৬৩ লাখ ১২ হাজার ৪৬০ জন।  এখন পর্যন্ত দেশে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ মিলে বিভিন্ন টিকা দেয়া হয়েছে ৪ কোটি ৮ লাখ ৯১ হাজার ১০৬ ডোজ। এই মুহূর্তে দ্বিতীয় ডোজ টিকার দরকার ৮২ লাখ ৬৬ হাজার ১৮৬ জনের। আর নিবন্ধনকারীদের মধ্যে এক ডোজও টিকা পাননি এমন সংখ্যা ১ কোটি ৯৩ লাখ ৬১ হাজার ৩০ জন। অর্থাৎ এদের প্রত্যেকের ২ ডোজ করে ৩ কোটি ৮৭ লাখ ২২ হাজার ৬০ ডোজ টিকা লাগবে। বর্তমানে নিববন্ধনকারীদেরই সবমিলিয়ে টিকা দরকার ৪ কোটি ৬৯ লাখ ৮৮ হাজার ২৪৬ ডোজ। কিন্তু টিকা হাতে মজুত আছে ১ কোটি ৪৪ লাখ ৩১ হাজার ৪৭৪ ডোজ।  বিভিন্ন হিসাব করে দেখা যায়, ৩ কোটি  ২৫ লাখ ৫৬ হাজার ৭৭২ ডোজ টিকার ঘাটতি রয়েছে এখনই। ২৬শে সেপ্টেম্বর বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন ৪ কোটি ৩৯ লাখ ৩৯ হাজার ৬৭৬ জন।

অন্যদিকে দেশে এ পর্যন্ত কেনা, উপহার ও কোভ্যাক্স সুবিধায় সবমিলিয়ে ৫ কোটি ৫৩ লাখ ২২ হাজার ৫৮০ ডোজ টিকা দেশে এসেছে। এরমধ্যে উপহার হিসেবে পাওয়া গেছে ৫৪ লাখ ডোজ টিকা। যা ভারত থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ৩৩ লাখ এবং চীন থেকে সিনোফার্মের ২১ লাখ টিকা উপহার দিয়েছে দেশগুলোর সরকার। ভারতের কাছ থেকে উপহার পাওয়া টিকার মধ্যে দেশটির সেনাপ্রধান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে ১ লাখ টিকা উপহার দিয়েছেন। বাংলাদেশ সফরে এসে ভারতের সেনাপ্রধান তা বাংলাদেশের সেনাপ্রধানের হাতে তুলে দেন। কেনা টিকা এসেছে ৩ কোটি ৬৭ লাখ ৯৭ হাজার ৭০০ ডোজ। এরমধ্যে চুক্তির মাধ্যমে কেনা টিকা ভারত থেকে এসেছে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ৭০ লাখ ডোজ এবং চীন থেকে সিনোফার্মের ২ কোটি ৯৭ লাখ ৯৭ হাজার ৭০০ ডোজ টিকা।

অন্যদিকে কোভ্যাক্স সুবিধায় বিভিন্ন দেশের নানা টিকা পাওয়া গেছে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৩১ লাখ ২৪ হাজার ৮৮০ ডোজ। এরমধ্যে কোভ্যাক্স আওতায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফাইজারের ১১ লাখ ৪ হাজার ৪৮০ ডোজ টিকা, যুক্তরাষ্ট্র থেকে মডার্নার ৫৫ লাখ ডোজ, একই সুবিধায় জাপান থেকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ৩০ লাখ ৫৯ হাজার ২০০ ডোজ, চীন থেকে  সিনোফার্মের ৩৪ লাখ ৬১ লাখ ২০০ ডোজ টিকা বাংলাদেশ কোভ্যাক্স সুবিধায় পেয়েছে। এদিকে করোনার টিকাকার প্রতিদিনের বিতরণের হিসাব পাওয়া গেলেও কি পরিমাণ টিকা নষ্ট হয়েছে তার তথ্য পাওয়া যায়নি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে। নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচিতে এখন প্রতিদিন প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ মিলে টিকা নিচ্ছেন ৫ থেকে ৬ লাখের মতো।

প্রসঙ্গত, দেশে করোনার টিকাদান উদ্বোধন হয় চলতি বছরের ২৭শে জানুয়ারি আর গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু হয় ৭ই ফেব্রুয়ারি থেকে। আর গ্রামের ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড টিকাদান ক্যাম্পেইন শুরু হয় ৭ই আগস্ট থেকে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ



© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২
Developed By ATOZ IT HOST