ঢাকা সফররত ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক আজ সোমবার।
গণভবনে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকের পর দুই শীর্ষ নেতার উপস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তি সই হওয়ার কথা রয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্যাটেলাইট বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হতে পারে। এর বাইরে অস্ত্র, উড়োজাহাজ ক্রয় এবং ইন্দো-প্যাসিফিক ইস্যুতে উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে।
ঢাকায় ফরাসি দূতাবাস তাদের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে লিখেছে, প্রেসিডেন্টের এই সফরে কিছু সুনির্দিষ্ট প্রকল্প এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে ভূমিকা রাখবে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও বলেছে, এই সফর দুই দেশের মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে এক ‘নতুন উচ্চতায়’ নিয়ে যাবে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ফরাসি প্রেসিডেন্টের এই সফর কয়েকটি কারণে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। ফ্রান্স বাংলাদেশে সমরাস্ত্র বিক্রি বাড়ানোর চেষ্টা করছে অনেক দিন ধরে। দেশটি মিলিটারি হার্ডওয়্যার শিল্পেও বেশ প্রভাবশালী।
যুক্তরাষ্ট্রের বোয়িংয়ের আধিপত্য কমাতে বাংলাদেশে বিমান বহরের জন্য এয়ারবাস কোম্পানির উড়োজাহাজ কেনার কথা বিবেচনা করছে বাংলাদেশ সরকার। অন্যদিকে ভারত মহাসাগরকে ঘিরে ফ্রান্সের আলাদা কৌশলগত স্বার্থ রয়েছে এবং এ অঞ্চলে দেশটির সামরিক উপস্থিতিও আছে। দেশটি এখন চাইছে এ অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক আরও নিবিড় করতে।
আজ সোমবার সকালে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করবেন এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট। এর পর তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার কার্যালয়ে বৈঠক করবেন। এ সময় সমঝোতা স্মারক সই এবং পরে যৌথ প্রেস ব্রিফিং হবে। এর পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন অপরাহ্ণে তাকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিদায় জানাবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, স্যাটেলাইট-সংক্রান্ত ও এয়ারবাসের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই হবে। নগর উন্নয়নে একটি সম্মতিপত্র সইয়ের প্রস্তুতিও রাখা হচ্ছে।
এ ছাড়া আরও কিছু বিষয়ে কাজ করা হচ্ছে, তবে সেগুলো চূড়ান্ত হয়নি। দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে ইন্দো-প্যাসিফিক, সামরিক বাহিনীগুলোর মধ্যে সহযোগিতা, প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা সহযোগিতাসহ রাজনৈতিক বিষয়ে আলোচনা হবে।
এর আগে, নয়াদিল্লি থেকে রোববার রাত ৮টা ১০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে স্বাগত জানান শেখ হাসিনা। বিমানবন্দরে তাকে লালগালিচা সংবর্ধনা ও গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।